ইন্টারনেটে কেউ গান শোনেন, কেউ ফেসবুক ব্যবহার করেন, অনেকে সারেন দরকারি কাজ। কেউবা আবার গেম খেলতে ঢুঁ মারেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। প্রধান ও জনপ্রিয় ব্রাউজারগুলোর সুবিধার তালিকা প্রায় একই। তবু ব্রাউজারগুলো আলাদা। একেকজনের কাজের ধরন বুঝেই ব্রাউজার নির্বাচন করা উচিত। আর সব কাজ এক ব্রাউজার দিয়ে করতে চাইলে জেনে নিতে হবে – কোন ব্রাউজার আপনার জন্য একদম উপযুক্ত।
ব্রাউজার আসলে কি?
ওয়েব ব্রাউজার(Web Browser) হলো এমন একটি সফটওয়্যার যেটি ব্যবহারের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী/ ইউজার যে কোনো ওয়েবপেইজ অথবা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে অবস্থিত কোনো ওয়েবসাইটের যে কোনো কনটেন্ট(লেখা, ছবি এবং অন্যান্য তথ্য) এর অনুসন্ধান, ডাউনলোড কিংবা দেখতে পারেন। কোনো ওয়েবসাইটে অবস্থিত লেখা এবং ছবি একই অথবা ভিন্ন কোন ওয়েবসাইটের সাথে হাইপারলিংক থাকলে একটি ওয়েব ব্রাউজার একজন ব্যবহারকারীকে দ্রূত এবং সহজে এই সকল লিঙ্কের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অবস্থিত অসংখ্য ওয়েবপেইজের সাথে তথ্য আদান-প্রদানে সাহায্য করে।
ব্রাউজার এর কাজ কি?
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বা মাইক্রোসফটের নতুন ব্রাউজার ‘এজ’(Microsoft Edge) দেওয়াই থাকে। আর অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য থাকে সাফারি(Safari)। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আরও দুটি ব্রাউজার ওপেন সোর্স কোড-ভিত্তিক গুগল ক্রোম ও মজিলা ফায়ারফক্স। এর বাইরে অন্য বেশ কিছু ব্রাউজার গুগল ক্রোমের সোর্স কোড ব্যবহার করে তৈরি। এসবের পরেই আছে অপেরা(Opera) ও ভিভালদি ব্রাউজারের নাম। গুরুত্বপূর্ণ সব ব্রাউজারই ভিন্ন ভিন্ন রেন্ডারিং ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকে। গুগল ব্যবহার করে ব্লিংক ইঞ্জিন। গেকো ইঞ্জিন ব্যবহার করে ফায়ারফক্স। ট্রাইডেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করে মাইক্রোসফট আর সাফারি ব্যবহার করে ওয়েবকিট ইঞ্জিন।ইন্টারনেটে কেউ গান শোনেন, কেউ ফেসবুক ব্যবহার করেন, অনেকে সারেন দরকারি কাজ। কেউবা আবার গেম খেলতে ঢুঁ মারেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। প্রধান ব্রাউজারগুলোর সুবিধার তালিকা প্রায় একই। তবু ব্রাউজারগুলো আলাদা। একেকজনের কাজের ধরন বুঝেই ব্রাউজার নির্বাচন করা উচিত। আর সব কাজ এক ব্রাউজার দিয়ে করতে চাইলে জেনে নিতে হবে কোন ব্রাউজার আপনার জন্য উপযুক্ত।
গুগল ক্রোম ব্রাউজার
নিরাপত্তার বিবেচনায় গুগল ক্রোম(Google Chrome) এগিয়ে থাকবে। বর্তমানে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার। ক্রোমে অন্য ব্রাউজারগুলোর তুলনায় ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করায় একটা ট্যাবে কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় কোনো কারণে ক্র্যাশ করলে সেটি পুরো ব্রাউজারে প্রভাব ফেলে না। তবে অন্যগুলোর তুলনায় ক্রোম কম্পিউটারের বেশি মেমোরি নিয়ে থাকে। একই সঙ্গে একাধিক ট্যাব চালু রাখলে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনে ব্যাটারি বেশি খরচ হয়। এই সমস্যা সমাধানে অবশ্য কাজ চলছে।
মজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজার
মজিলা ফায়ারফক্স(Mozilla Firefox) ক্রোমের মতোই দ্রুততার সঙ্গে ওয়েবসাইট দেখাতে পারে। এটি ক্রোমের তুলনায় মেমোরি কম খরচ করে কিন্তু কোনো ট্যাবের সাইট যদি ক্র্যাশ করে, তবে পুরো ব্রাউজারকে ক্র্যাশ করে ফেলে। কখনো কখনো একাধিক ট্যাব চালু রাখলে ফায়ারফক্স ধীরগতির হয়ে যায়। ফলে এটিকে রিস্টার্ট করার প্রয়োজন পড়ে।
মাইক্রোসফট এজ ব্রাউজার
মাইক্রোসফট এজ(Microsoft Edge) দ্রুত এবং এতে নিরাপত্তাও বেশ ভালো। বলা হয় এটি ক্রোমের মতোই ব্যাটারি বেশি খরচ করে। কিন্তু এটি এখনো ডেভেলপমেন্ট অবস্থায় আছে। উইন্ডোজ দশের করটানা সুবিধা এতে যুক্ত থাকায় এটি ব্যবহার সুবিধাজনক। ফায়ারফক্সের স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখলেও এটি অন্তত ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের চেয়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে। তবে এতে ব্রাউজার এক্সটেনশন কম থাকায় অনেকটা পিছিয়েও আছে।
অন্যান্য ব্রাউজার
গোপনীয়তা ও অন্যান্য কারণে ক্রোম-ভিত্তিক ভিভালদি ব্যবহার করা যায়। নিজের পছন্দমতো এটি সাজিয়ে নেওয়া যায়। অপেরা ব্রাউজারের আগের ডেভেলপাররা ভিভালদি তৈরি করেছে। ভিভালদি ও অপেরা ব্রাউজারে ক্রোমের অনেক এক্সটেনশনই সমর্থন করে। জনপ্রিয় এই ব্রাউজারের বাইরে আরও কিছু ব্রাউজার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। রাশিয়ান সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্সের ডেভেলপারদের বানানো ইয়ানডেক্স ব্রাউজার অনেকটা গুগল ক্রোমের মতোই। ক্রোমিয়াম-ভিত্তিক এই ব্রাউজারে চাইলেই আপনি পছন্দমতো আপনার দরকারি সব কাজই করতে পারবেন। উইন্ডোজ, ম্যাক ও স্মার্টফোনে ব্যবহার করা যায় এটি। এ ছাড়া কোমোডো আইসড্রাগন ব্রাউজারের নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ ভালো। অনিরাপদ ওয়েবসাইট বা নিরাপদ লগইনের জন্য এটি বেশ ভালো। ফায়ারফক্সের প্লাগইনস এখানে ব্যবহার করতে পারবেন। আবার ম্যাক্সথন ব্রাউজার একসঙ্গে একাধিক সাইটকে পাশাপাশি দেখিয়ে ব্রাউজিংয়ের সুবিধা দেয়। এর ইউএক্স অনেক নজরকাড়া।
যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা দরকার
নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, গতি—সব মিলিয়ে নির্ধারণ করতে হবে, কোন ব্রাউজার আপনার জন্য। ওয়েব ব্রাউজার হতে হবে দ্রুততর এবং সব অপারেটিং সিস্টেম সমর্থিত। এমন হতে হবে, যাতে নিরাপত্তাবলয় থাকবে জোরদার। হতে পারে আপনার অজান্তেই এমন এক লিংকে ক্লিক করেছেন, যার ফলে কম্পিউটারে ভাইরাস এসে গেল। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিতে হবে আগে।
ব্রাউজার সম্পর্কিত প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নঃ
প্রশ্ন ০১। <- -> ব্রাউজারের এই চিহ্ন কাজ কি?
উত্তরঃ ব্রাউজারের <- এবং -> চিহ্ন দুটি সাধারণত ব্যাক (back) এবং ফরোয়ার্ড (forward) বোতাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
<- (ব্যাক) বোতামটি ব্যবহার করে আপনি পূর্বের পৃষ্ঠায় ফিরে যেতে পারেন।
-> (ফরোয়ার্ড) বোতামটি ব্যবহার করে আপনি ব্যাক বোতাম টিপে ফিরে যাওয়া পৃষ্ঠায় আবার এগিয়ে যেতে পারেন।
এই বোতামগুলো ব্যবহার করে আপনি ব্রাউজারের ইতিহাসে সহজেই নেভিগেট করতে পারবেন।