প্রতিদিন একই কাজ করতে আমরা অভ্যস্ত। সেই সাতসকালে অফিসে যাওয়া আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আর কি কিছু করতে ইচ্ছে করে? গড়িমসি করতে করতে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে শেষ দিন পার হয়ে যায়। আবার আজ চিকিৎসকের কাছে যাব কি যাব না, ভাবতে ভাবতে দিনই পার হয়ে যায়। কখনো কখনো কোনো কাজ করব করব বলে আলস্যের কারণে আর করা হয়ে ওঠে না। শহুরে বাস্তবতা আর ব্যস্ততায় আলস্যের কারণে করি-করব বলে অনেক কাজই করতে পারি না, এককথায় আসলে করা হয়ে ওঠে না। এমনটা অভ্যাসই হয়ে উঠেছে। সেই আলস্য এড়াবেন কীভাবে?
কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনে অলসতা এড়িয়ে চলাই ভাল। আমরা আসলে অলস নই, আমরা অনুপ্রাণিত নই বলেই আলস্য আমাদের ওপর ভর করে। প্রতিদিন একই কাজ করতে করতে নিস্তেজ হয়ে যাই। জীবনে সজীবতা নেই বলে আমরা পেশাজীবনে যেমন আলস্য দেখাই, তেমনি ব্যক্তিজীবনে হয়ে উঠেছে বর্ণহীন। আলস্য এড়ানোর কাজটি পরিপূর্ণভাবে আমাদের মন থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দেখে নেয়া যাক আলসেমী দূর করার কিছু উপায় এক নজরে।
নিজেকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন
চোরাবালি দেখেছেন কখনো? কিছু পড়লেই চোরাবালি যেমন গিলে খায়, তেমনি নিজেকে দোষ দেওয়াও এমন একটি অভ্যাস। নিজের দোষ নিয়ে যত ভাববেন, ততই আপনি ডুবে যাবেন। নিজের ওপর দোষ দিতে থাকলে আসলে নিজের আত্মবিশ্বাস কমে যায়। কাজে কী সমস্যা, কাজে কেন দেরি হচ্ছে, কাজের মান খারাপ কেন? এসব নিয়ে ভাবুন, সমাধানে মনোযোগ দিন। দোষারোপ বাদ দিন।
নতুন অভ্যাস গড়ে তুলুন
পুরোনো যা অভ্যাস আছে, যা কাটানোর জন্য নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়। পুরোনোকে বাদ দেওয়ার চেয়ে নতুন অভ্যাস গড়ে তুললে নিজের আলস্য কাটানো যায়। ছোট ছোট অভ্যাসে নিজের অলসতা কাটানো শুরু করুন। আজই লিফটে না চড়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটুন কিংবা পুরো পত্রিকা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আজই শুরু করুন।
শুরু করুন সহজে
কয়েক বছর ধরে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার দৌড়ানোর ইচ্ছে আপনার, সেই দৌড়ানোর অভ্যাস আর গড়ে তুলতে পারছেন না? শুরুতেই বড় কিংবা কঠিন কিছুকে অভ্যাস হিসেবে তৈরি করা বেশ কঠিন। শুরু করুন সহজ কিছু দিয়ে। আজই ১০ মিনিট কিংবা ১ কিলোমিটার দৌড়ান।
তিন সপ্তাহ সময় দিন
যেকোনো অভ্যাস গড়ে তুলতে গড়ে ২১ দিন সময় দিতে হয়। টানা ২১ দিন কোনো কাজ করুন, অভ্যাস হয়ে যাবে তা তখন। টানা তিন সপ্তাহ লিফট এড়িয়ে চলুন, সিঁড়ি ব্যবহার করুন। সকালে বই পড়তে পারেন।
গুরুত্ব ও প্রয়োজন বুঝে কাজ ভাগ করুন
ব্যক্তিজীবন ও কর্মক্ষেত্রে কোনো কাজের গুরুত্ব কেমন তা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। কাজের প্রকৃতিকে যদি গুরুত্ব ও প্রয়োজন বুঝে কাজ ভাগ করতে পারেন, তাহলে সহজেই অলসতা কাটানো যায়। স্বাস্থ্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা শুরু করলে আজই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন কিন্তু। আপনার কাছে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ হলে বাড়িঘর পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা কিন্তু প্রয়োজন।
নিয়মে অভ্যস্ত হোন
কাল সকাল থেকে বদলে ফেলব নিজেকে, এমন করে কতই-না অনুপ্রেরণা আমরা নিজেদের দিয়ে থাকি। কালকেই দৌড়ানো শুরু করব, এমন অনুপ্রেরণা হরহামেশাই নিই আমরা। অনুপ্রেরণার ধার আসলে প্রতিদিন এক থাকে না। যদি দৌড়ানোকে নিয়ম বানিয়ে ফেলেন তাহলে দেখবেন শরীর-মন দুর্বল হোক কিংবা বাইরে বৃষ্টি হোক, আপনি দৌড়াবেনই।
আজকের জন্য কাজ করুন
আজকের জন্য কী কী কাজ করবেন তা প্রতিদিন সকালে একটি ছোট কাগজের টুকরোতে লিখে নিন। সেই কাজগুলো সারা দিন ধরে করে ফেলুন। আগামীকালের জন্য কাজ তখনই জমে যায় যখন আজকের কাজগুলো ঠিকমতো শেষ হয় না।
অবচেতন মনে যেসব অভ্যাসকে গ্রহণ করতে পারেন
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই নিজের বিছানা গুছিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। দিনে অন্তত আট গ্লাসের বেশি পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
বই পড়ুন।